নানামূখী উদ্যোগে সবার নজরে চট্রগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

- ডেস্ক রিপোর্ট:
- 02 Jul, 2025
আগস্ট, ২০২৪ পরবর্তী বিগত ১০ মাসে নানামূখী উদ্যোগে যাত্রীবান্ধব বিমানবন্দর হিসেবে সবার নজরে এসেছে চট্রগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অনেকটা কমে এসেছে অভিযোগের সংখ্যা। পাশাপাশি অভিযোগ পাওয়া মাত্রই নেয়া হচ্ছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও সমস্যার উত্তোরণে সমাধান।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীবান্ধব নানান তথ্য উপস্থাপনে জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিলের প্রেজেন্টেশন স্লাইডের মাধ্যমে উঠে আসে কিভাবে বর্তমান পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর কর্তৃক গৃহীত নানা উদ্যোগে অনেকটাই বদলে গেছে চট্রগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
নেই কার পার্কিং এ যাত্রী হয়রানির নিত্যকার ঘটনা। অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে টিপস এর নামে যাত্রীদেরকে হয়রানির ঘটনা।
যাত্রী পরিসেবা সংক্রান্ত প্রত্যাশী কর্তৃক আয়োজিত প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিচালক,গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর শাহ জানান , " চট্রগ্রাম বিমানবন্দরে অভিবাসীদের সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতে আমি অত্র বিমানবন্দরে যোগদানের পর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তথ্য সহায়তা কেন্দ্র, ফ্রি ওয়াইফাই জোন বর্ধিতকরণ, ফ্রি টেলিফোন বুথ, অসুস্থ যাত্রীদের কল্যাণে ব্র্যাকের সহযোগিতায় ইমার্জেন্সি এম্বুল্যান্স সার্ভিস চালুকরণ, পুরুষ মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজ কক্ষের মানোন্নয়ন, ব্রেস্টফিডিং কর্ণার চালুকরণ, মিট এন্ড গ্রিট সার্ভিস, হেল্প ডেস্কের মানোন্নয়ন এবং অনলাইন রেন্ট এ কার সার্ভিস চালুকরণ, তা সত্বেও এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে- বিশেষত প্রবাসীদের ভাষাগত জটিলতা, প্রতারিত হওয়ার আসঙ্কা, লাগেজ সংক্রান্ত ভোগান্তি, অদক্ষতা ও তথ্য ঘাটতি। প্রত্যাশীর মতো প্রতিষ্ঠানের মাঠ পর্যায়ে তথ্যবহুল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকদের তথ্য ঘাটতি কিছুটা লাঘব হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
তিনি আরও বলেন,যে প্রত্যাশী জেলা পর্যায়ে প্রবাসীদের নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করলেও বিমানবন্দরে প্রত্যাশীর সরাসরি কার্যক্রম এখনো পর্যন্ত নেই। তাই আমার সবিনয় অনুরোধ থাকবে প্রত্যাশী যেন ব্র্যাক, শামসুল হক ফাউন্ডেশন এর মতো বিমানবন্দরে তার সহায়তা কার্যক্রম প্রসারিত করার মাধ্যমে প্রবাসী যাত্রীদের কল্যাণে আরও অগ্রগামী হতে পারে। সেটা হতে পারে তথ্যনির্ভর সেবা, খাবার/লজিস্টিক সহায়তা সংক্রান্ত, বিদেশফেরত প্রবাসীর মৃত লাশ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত।
যেহেতু চট্রগ্রাম বিমানবন্দরের প্রায় ৭৭% যাত্রী হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য গামী প্রবাসী শ্রমিক। সেহেতু আমি আজকের সভায় উপস্থিত সকল অংশীজনকে আহবান জানাচ্ছি- আমরা যেন একটি একীভূত ও সমন্বিত কাঠামোতে কাজ করি, যেখানে অভিবাসীর সম্মান, নিরাপত্তা ও কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে"।
অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রত্যাশীর প্রধান নির্বাহী মনোয়ারা বেগম আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন যে, "গত ৪০ বছর যাবত প্রত্যাশী প্রবাসীদের নানান অসুবিধা, চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করে আসছে। হেলভিটাস বাংলাদেশের অর্থায়নে প্রত্যাশী তার Strengthening & Informative Migration Systems (SIMS) Project phase-2 এর মাধ্যমে চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারের ১২ টি উপজেলার ৬৮ টি ইউনিয়নে বিদেশে অবস্থানরত ও বিদেশফেরত প্রবাসীদের নিরাপদ অভিবাসন ও তাদের পরিবারের মানোন্নয়নে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রত্যাশী চারটি ধাপে এসকল সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষ যেহেতু আমাদেরকে আহবান জানাচ্ছেন সেহেতু আমরা অবশ্যই প্রবাসীদের কল্যাণে বিমানবন্দরে সরাসরি কাজ করতে আগ্রহী এবং পরিচালক মহোদয়ের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে যে যে খাত গুলোতে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন প্রত্যাশী নিশ্চিতভাবে তাতে অংশগ্রহণ করবে"।
মুক্ত আলোচনায় প্রবাসীদের নানান অসুবিধা ও তার উত্তোরণে সমাধানের মতামত উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র চাকমা বলেন, “বাংলাদেশের যে অঞ্চলগুলো থেকে বেশি মানুষ বিদেশে যান তার মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। যে জেলাগুলোর প্রবাসী আয় সবচেয়ে বেশি তার মধ্যেও আছে চট্টগ্রাম। তবে এখনো দেখা যায় লোকজন জেনে বুঝে দক্ষ হয়ে বিদেশে যান না। দক্ষ হয়ে তথ্য জেনে বিদেশে গেলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর বিদেশফেরতদের কল্যাণে আমরা-প্রত্যাশীসহ সরকারি বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে একসাথে কাজ করছি”।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনী টাস্কফোর্সের প্রধান উইং কমান্ডার শামসুন নীহার, বিমানবন্দরের স্টেশন এয়ার ট্রাফিক অফিসার জনাব সাধন কুমার মহন্ত, বিমানবন্দরে ডিজিএফআইয়ের প্রধান স্কোয়ান্ড্রন লীডার তারিক আজিজ মৃধা, বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মো: এরফানুল হক চৌধুরী, হেলভিটাস বাংলাদেশের প্রতিনিধি জনাব প্রেমাংশু শেখর সরকার।
এছাড়া সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কার্যক্রম বাস্তবায়নরত সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কসহ সরকারি সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাবৃন্দ, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিক, ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
